সৌদি আরবে নির্যাতনে মৃত্যু হওয়া বাংলাদেশি নারী শ্রমিক খুলনার আবিরন বেগমের মরদেহ অবশেষে তিন মাস পর দেশে এসেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর লাশ গ্রহণ করে তার পরিবার।
আবিরনের পরিবার জানায়, সৌদিতে দুই বছর নানাভাবে নির্যাতিত হন আবিরন। এ বছরের ১৭ জুলাই গৃহকর্তার বাসায় মারা যান তিনি।
তার মৃত্যুর খবর সৌদি আরবের রিয়াদ বাংলাদেশ দূতাবাস ও ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মাধ্যমে জানতে পারে তার পরিবার। অবশেষে মৃত্যুর ৫১ দিন পরে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের সহযোগিতায় রিয়াদ বাংলাদেশ দূতাবাস ও ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মাধ্যমে তার লাশ দেশে পৌঁছাল।
সৌদি থেকে দেওয়া আবিরনের মৃত্যুসনদে মৃত্যুর কারণের জায়গায় লেখা আছে ‘হত্যা’। তবে সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সি ফাতেমা এমপ্লয়মেন্ট সার্ভিসেস (আরএল-১৩২১) পরিবারকে জানায়, সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন আবিরন।
আবিরনের ছোট বোন রেশমা জানান, শুরুতে সৌদি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও পরে বাতিল করেছিলেন আবিরন বেগম। কিন্তু রিক্রুটিং এজেন্সি ফাতেমা এমপ্লয়মেন্ট সার্ভিসেসের চাপ ও হুমকির মুখে ২০১৭ সালের জুলাই মাসে সৌদি যেতে বাধ্য হন আবিরন।
আবিরনের বোন অভিযোগ করেন, সেখানে গিয়ে নিয়োগকর্তার নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে হয় তাকে। সমস্যার কথা নিয়ে এজেন্সি ও দালালের কাছে গেলে তারা বিভিন্নভাবে হুমকি দেয় পরিবারকে। এমনও বলা হয়, ‘এমন ব্যবস্থা নেব আবিরন আর কথাও বলবে না কোনোদিন।’ এজেন্সির হুমকির মুখে পরিবারও ছিল অসহায়।
রেশমা আরও জানান, তার নিয়োগকর্তা আবিরনের ওপর নির্মম নির্যাতন চালিয়ে তাকে মেরে ফেলেছে। এমনকি দুই বছরে কোনো বেতনও দেওয়া হয়নি তাকে। মৃত্যুর পর তাদের জানানোও হয়নি।