যৌনহয়রানি সংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার মামলার সোনাগাজী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবেন নুসরাত জাহান রাফির বান্ধবী নাসরিন সুলতানা ফুর্তি ও নিসাত সুলতানা।
আজ বুধবার রাষ্ট্রপক্ষে বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি নজরুল ইসলাম শামীম উল্লেখিত দুজনসহ তিনজনের সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আবেদন করেন।
ঢাকার সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ৪ নভেম্বর তাদের সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন।
আজ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই’র সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রীমা সুলতানা সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে হাজির হন। তবে রাষ্ট্রপক্ষে নুসরাতের দুই বান্ধবীসহ তিনজনের সাক্ষ্যগ্রহণের আবেদন করায় তার সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি।
এ সম্পর্কে সরকারি কৌঁসুলি নজরুল ইসলাম শামীম বলেন, ‘নিহত নুসরাতের দুই বান্ধবী ও অপর একজন সাক্ষী সিআইডির ফেরেন্সিক কর্মকর্তা মোহাম্মাদ বাদী। এ মামলার অভিযোগ প্রমাণের জন্য তদের সাক্ষ্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই আবেদন করা হয়েছে।’
ফরেন্সিক কর্মকর্তা মোহাম্মাদ বাদী ওসি মোয়াজ্জেম যে মোবাইল থেকে ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছে তার পরীক্ষক বলেও জানান নজরুল ইসলাম শামীম।
বুধবার শুনানিকালে কারাগারে থাকা আসামি ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে ট্রাইব্যুনালে কারাকর্তৃপক্ষ হাজির করেন। এর আগে মামলাটিতে রাষ্ট্রপক্ষে বাদী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনসহ আটজনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।
মামলাটিতে গত ১৭ জুলাই আসামি মোয়াজ্জেমের অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে চার্জগঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। মামলায় চলতি বছর ২৭ মে পিবিআইয় দাখিলকৃত তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে এ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
গত ১৬ জুন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন গ্রেপ্তার হন এবং ১৭ জুন তাকে একই ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন একই বিচারক। এরপর গত ২৪ জুন এক আবেদনে ট্রাইব্যুনাল তাকে কারাবিধি অনুযায়ী ডিভিশন প্রদানের আদেশ দেন। প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে কারাবিধি অনুযায়ী প্রথম শ্রেণির মর্যাদা ভোগ করছেন।
উল্লেখ্য, অধ্যক্ষ সিরাজ উদদ্দৌলার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানীর মামলা তুলে নেওয়ার জন্য গত ৬ এপ্রিল রাফিকে মুখোশ পরা চার থেকে পাঁচজন চাপ প্রয়োগ করে। এতে অস্বীকৃতি জানালে তার গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যান ওই দুর্বৃত্তরা। এর পাঁচদিন পর গত ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে মারা যান তিনি। ওই ঘটনার হত্যা মামলায় গত ২৪ অক্টোবর আদালত ১৬ জনের মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন।