ভাসানচরের নতুন জীবনে অভ্যস্ত হতে শুরু করেছে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গারা। কক্সবাজারে ক্যাম্পের জীবন ছেড়ে এখানকার পরিবেশে বেশ ভালো আছে তারা। চলতি সপ্তাহে আরও ৪ হাজার রোহিঙ্গাকে নিয়ে যাওয়া হবে ভাসানচরে। তবে মিয়ানমারে ফেরা নিয়ে এখনো সংশয় কাটেনি তাদের।
বঙ্গোপসাগর ও মেঘনার মোহনায় জেগে উঠা ভাসানচর কয়েক মাস আগেও যা ছিল জনমানব শূন্য এক জনপদ সেখানে এখন প্রাণের সঞ্চার ঘটেছে।
দেশি বিদেশি নানা অপপ্রচার আর সংশয়কে ভুল প্রমাণ করে ৩ মাস হতে চলল এ চরে রোহিঙ্গাদের বসতি স্থাপনের। কক্সবাজারের ছোট্ট খুপড়িতে বাস করা মানুষ এখানে পেয়েছেন আধুনিক পরিকল্পিত আবাসন। সরকারিভাবে রয়েছে খাবারের সুব্যবস্থা। প্রকল্পে নির্মাণ করা হয়েছে লক্ষাধিক মানুষের জন্য ঘর। তবে এখন পর্যন্ত ৩ দফায় রোহিঙ্গা গেছে মাত্র ৭ হাজারের মতো। ভাসানচরের নতুন জীবনে কেমন আছেন তারা?
জানা গেলে তাদের মুখ থেকে । রোহিঙ্গারা বলেন, কক্সবাজার ক্যাম্প থেকে এখানে (ভাসানচরে) ভালো আছি, এখানে ঘর দিয়েছে। এখানে কোনো খারাপ দেখছি না।
ক্রমেই নতুন পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে উঠছেন রোহিঙ্গারা। কক্সবাজারের চেয়ে ভাসানচরের জীবনকে ভালো মনে করছেন তারা। তবে নিজের দেশ মিয়ানমারে ফেরার ব্যাপারে সংশয় কাটছে না তাদের মনে।
রোহিঙ্গারা জানান, বাপ-ছেলে মিলে চারজন গেলাম, দুজন ফেরত আসতে বাকিদের মেরে ফেলবে, কীভাবে যাব। জানমালের নিরাপত্তা পেলে আমরা চলে যাব।
ভাসানচরের সুযোগ সুবিধার ফলে কক্সবাজার থেকে আরও বেশি রোহিঙ্গারা আসার ব্যাপারে আগ্রহ দেখাচ্ছেন বলে জানান ভাসানচর পুনর্বাসন প্রকল্পের পরিচালক কমোডর আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী। চতুর্থ দফায় ৪ হাজার রোহিঙ্গাকে আনা হবে এ চরে।
বর্তমান পরিকল্পনায় এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচর আনা হবে। তবে আরও ২ লাখ রোহিঙ্গাকে এ চরে আনার সুযোগ রয়েছে।
২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইনে সেনাবাহিনীর দমনপীড়নে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নেয়। এ ছাড়া আগে থেকে আশ্রয় নেওয়া আরও চার লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে নিয়ে কক্সবাজার বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী আশ্রয় কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।