ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার ট্রেন দুর্ঘটনা তছনছ করে দিয়েছে মাইনুদ্দিনের জীবন। গতকাল সোমবার রাতে দুর্ঘটনার পর ঢাকার একটি হোটেলে কাজ করা মাইনুদ্দিন আজ মঙ্গলবার খবর পেয়ে কসবায় যান।
সেখানে গিয়ে তিনি কসবার বায়েক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খোলা অস্থায়ী তথ্যকেন্দ্রের লাশের সারিতে স্ত্রী কাকলি আক্তারকে (২৮) খুঁজে পান। আর আড়াই বছর বয়সী মেয়ে মহিমাকে পান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে।
গত সোমবার দিবাগত রাত পৌনে তিনটার দিকে কসবার মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথা ও চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত হন। আহত হন অন্তত ৭৬ জন। আহতদের উদ্ধার করে কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। মহিমাকে দুর্ঘটনার পর উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে।
শিশুটির বাবা মাইনুদ্দিন গণমাধ্যমকে জানান, পরশু হজরত শাহজালাল (রা.) ও হজরত শাহপরানের (রা.) মাজার জিয়ারত করতে তার স্ত্রী কাকলি আক্তার, মেয়ে মহিমা আক্তার, মামা জাহাঙ্গীর মাল, মামি আমাতন বেগম ও মামাতো বোন মরিয়ম সিলেটে যান। সোমবার সিলেট থেকে উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনে করে চাঁদপুরের উদ্দেশে রওনা হন তারা। চাঁদপুর থেকে ট্রলারে করে তাদের শরীয়তপুরে বাড়ি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু দুর্ঘটনায় তার স্ত্রী, মামি ও মামাতো বোন মারা যান। আজ বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে কাকলির বড় ভাই ফরিদ মুন্সী ও তিনি লাশ শনাক্ত করেন।
তার মামা জাহাঙ্গীর এখন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলেও মাইনুদ্দিন জানান।
এদিকে মঙ্গলবার সকালে শিশুটিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করার পর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক শওকত হোসেন বলেন, ‘সকালে আহত রাহিমা আক্তার নামের এক বৃদ্ধা ওই শিশুকে নিয়ে হাসপাতালে আসেন। রাহিমা চাঁদপুরের সাতিরাশির বাসিন্দা। তখন তিনি এই শিশুর নাম মহিমা বলে জানান। তার বাবার নাম মঈন উদ্দিন এবং চাঁদপুরের কাকলী তিতাসের বাসিন্দা বলে জানালে রেজিস্টার্ড বইয়ে সেটিই উল্লেখ করা হয়।’
শওকত হোসেন আরও বলেন, ‘শিশুটির কপালের বাম পাশ থেকে মাথার পেছন অংশ পর্যন্ত ব্যান্ডেজ করা হয়েছে। কপালে সেলাই দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে শিশুটি হাসপাতালে চিকিৎসক ও নার্সদের তত্ত্বাবধানে আছে।’