আন্তর্জাতিক সীমান্ত সংলগ্ন কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় ড্রোন উড়ানোকে ‘নিরাপত্তা ঝুঁকি’ হিসেবে দেখছে বাংলাদেশ। ফলে এটি বন্ধে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। নীতিনির্ধারণী মহলে এ নিয়ে বিস্তৃত আলোচনার প্রেক্ষিতে ওই সিদ্ধান্ত হয়।
দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর সক্রিয়তা এবং স্পর্শকাতরতার বিষয়টি বিবেচনায় সীমান্ত সংলগ্ন ক্যাম্প এলাকায় ড্রোন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে বাস্তব সম্মত কারণ বিদ্যমান থাকলে পূর্বানুমতিক্রমে যে কোন আন্তর্জাতিক সংস্থা ড্রোন চালিয়ে ক্যাম্প এলাকার ছবি বা ভিডিও ধারণ করতে পারবে, সেই সুযোগ রাখা হয়েছে।
সে ক্ষেত্রে বেসরকারী বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের আগাম অনুমতি নিতে হবে এবং ড্রোন-ক্যামেরা রেজুলেশন এবং কনফিগারেশন সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য লিখিতভাবে সরকারকে জানাতে হবে। বাংলাদেশ চাইলে এ নিয়ে যে কোন পূর্বশর্ত জুড়ে দিতে পারে। অনুমতি দেয়ার পরও নিরাপত্তাজনিত যে কোন সন্দেহে সেটি বাতিল করার এখতিয়ার রাখে।
রোহিঙ্গা বিষয়ক জাতীয় টাস্কফোর্সের প্রধান পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হকের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে মানবজমিনকে গতকাল তিনি বলেন, ক্যাম্প এলাকায় দেশি বিদেশি যে কারও ড্রোন ব্যবহার করে ছবি বা ভিডিও ধারণের প্রয়োজন হলে তাকে অবশ্যই আগে সরকারের অনুমতি নিতে হবে।
এটাই আমাদের সিদ্ধান্ত। এ নিয়ে বিস্তারিত বলতে সচিব অপারগতা প্রকাশ করেন। এ নিয়ে আলোচনায় সেগুনবাগিচার অন্য এক কর্মকর্তা বলেন, সরকারের নোটিশে এসেছে কতিপয় ব্যক্তি বা গোষ্ঠী রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় নিয়মিত ড্রোন ব্যবহার করে ছবি ও ভিডিও করছেন। ওই ছবি কোথায় কী কাজে ব্যবহার হয়েছে বা হচ্ছে তা স্পষ্ট নয়।
এমনও ঘটনা আছে যে অনেকে নিছক বিনোদনের জন্য ক্যাম্প এলাকায় ড্রোন উড়িয়ে ছবি ধারণ করেছেন। যা দু:খজনক। অজ্ঞাত কারণে ড্রোন ব্যবহারকারীরা সিভিল এভিয়েশন তো দূরে থাক, স্থানীয় প্রশাসনেরও অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন মনে করেননি।
উল্লেখ্য, সীমান্ত এলাকাই নয়, দেশের কোথাও যে কোন স্থানে ড্রোন উড্ডয়নের জন্য অনুমতি দেয়ার বিষয়টি সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশ এর এখতিয়ারভুক্ত। তারা এ অধিকার সংরক্ষণ করেন। অননুমোদিত ড্রোন উড্ডয়ন নিরাপত্তার জন্য হুমকি হওয়া ছাড়াও জনমনে ভীতির সঞ্চার করতে পারে।
উল্লেখ্য, ক্যাম্প এলাকায় ড্রোন ব্যবহারে সরকারের কড়াকড়ি আরোপের প্রেক্ষিতে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা ছবি তুলতে ড্রোনের ব্যবহারের অনুমতি চেয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেই আবেদন বেসরকারী বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে।