টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের নোয়াখালী পাড়া গ্রামে এক কৃষকের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করার সময় কিছু ভূঁয়া সাংবাদিক পালিয়ে রক্ষা পেয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সূত্রে জানা যায়, শনিবার (৭ ডিসেম্বর) বিকাল ৫টার দিকে নোয়াখালী পাড়ার স্থানীয় দিনমজুর কৃষক আবদুল আলীর বাড়িতে গিয়ে মালয়েশিয়ায় সাগর পথে মানব পাচার করে বলে হুমকি দিয়ে মোটা অংকের টাকা চাঁদা দাবী করে। কিন্তু আব্দুল আলী টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে আজকের মধ্যে ক্রসফায়ার দেওয়া হবে বলে হুমকি প্রদান করে তারা। একপর্যায়ে উক্ত কৃষক তাদেরকে আটকে রেখে থানায় খবর দিতে চাইলে ভূয়া সাংবাদিকরা পালিয়ে যায়।
কৃষক আব্দুল আলী সহ এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, সরকারী অনুমোদনহীন সিএনএন বাংলা নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলের মোবাইল প্রতিনিধি দিদারুল আলম জিসানের নেতৃত্বে কয়েক যুবক একটি নোহা গাড়ী যোগে আমার বাড়িতে এসে যখন চাঁদা দাবী করে তখন আমি বিভিন্ন মাধ্যমে খবর নিয়ে দেখি যে তারা আসলে কোনো সরকারী অনুমোদিত টিভির সাংবাদিক না। তারা ভূয়া সাংবাদিক। আর প্রকৃত সাংবাদিক হলে তারা আমার কাছে চাঁদা দাবী করতো না। আমি তাদের বৈধ কাগজ পত্র দেখাতে বললে উল্টো তারা আমাকে ক্রসফায়ার দেবে বলে হুমকি দেয়। তাই আমি নিরুপায় হয়ে তাদেরকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য তাদের রশি দিয়ে বেঁধে ফেলতে চাইলে তখন তারা চোরের মত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তারপরও আমি যখন তাদের ধরে রেখে প্রশাসনকে খবর দিতে প্রস্তুতি নিতে থাকি তখন স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. ইলিয়াছ এসে তাদেরকে নিয়ে যান।
এই ব্যাপারে ইউপি সদস্য মো. ইলিয়াছ এই ভূঁয়া সাংবাদিকদের নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে অস্বীকার করে বলেন তারা নিজ থেকে পালিয়ে গেছে। তিনি বলেন সাংবাদিক নামধারী লোকেরা আমার কাছ থেকে আমার এলাকার বাসিন্দা আবদুল আলীর ব্যাপারে জানতে চেয়েছিল কিন্তু আমি কিছু বলেনি। তবে কে ভূঁয়া কে সঠিক তা আমরা তেমন যাচাই করিনা। কারণ সাংবাদিকদের সাথে আমাদের তেমন উঠাবসা নেই। তবে ভবিষ্যতে এই ব্যাপারে সাবধান থাকব।
এদিকে উক্ত ভূয়া সাংবাদিকদের সাথে ছিল বাহারছড়ার পুরান পাড়া গ্রামের স্থানীয় রাজমিস্ত্রী মিজবাউল হক ও উত্তর শীলখালীর জুবাইরুল হক নামে দুই যুবক। এলাকাবাসী জানান, তারা দুইজনই বছর পাঁচেক আগে নৌপথে অবৈধ ভাবে মালিশিয়া গিয়ে বছর খানেক আগে আবার দেশে ফিরে আসে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সিএনএন বাংলা টিভির সাংবাদিক দিদারুল আলম জিসানের ফোনে (০১৬২৭৪৬৯১৪১) বারবার কল করা হলেও ফোন রিসিভ না করাই বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে ইংরেজি দৈনিক ডেইলি ইন্ডাস্ট্রির কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি বাহারছড়া এলাকার বাসিন্দা জাফর আলম বলেন কিছু ভুঁইফোড় অনলাইন ও ব্যক্তিগত ইউটিউব চ্যানেলের নাম দিয়ে অর্ধশিক্ষিত-অশিক্ষিত কিছু যুবক বাহারছড়ায় বিভিন্ন দূর্বল মানুষকে হুমকি দিয়ে চাঁদাবাজিতে মেতে উঠেছে। অথচ এরা সাংবাদিক বানানও করতে জানেনা। তাই স্থানীয় প্রশাসন সহ মুলধারার গণমাধ্যমকে এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে এবং অপসাংবাদিকতাকে রুখতে হবে। সাংবাদিকতাকে কেউ যেন খারাপ ভাবে ব্যবহার করতে না পারে সে ব্যাপারে সকলের সজাগ হওয়া প্রয়োজন।