টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে স্ত্রীর পরকীয়ার বলি হলেন স্বামী। স্বামীকে হত্যার অভিযোগে স্ত্রীসহ প্রেমিককে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে উপজেলার পাথালিয়া এলাকা থেকে স্ত্রী সাথী খাতুন ও প্রেমিক উজ্জ্বলকে আটক করেছে কালিহাতী থানার পুলিশ।
এ ঘটনায় নিহত তোফাজ্জল হোসেন তোতার ছোট ভাই তারা মিয়া বাদী হয়ে নিহতের স্ত্রী সাথী খাতুন (৩১) ও পাথালিয়া গ্রামের সেকান্দর আলীর ছেলে প্রেমিক উজ্জ্বল (২৯) এবং একই গ্রামের মৃত নাসিম উদ্দিনের ছেলে আব্দুল জলিলকে (৪৫) আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, নিহতের স্ত্রী সাথী খাতুনের সাথে উজ্জ্বল পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে তুলে অবৈধ মেলামেশা করে আসছিলেন। বিষয়টি তোফাজ্জল হোসেন তোতা জানার পর উভয়কেই বাধা দেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৯ ডিসেম্বর সকালে রাজমিস্ত্রির কাজ করার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি উল্লেখ করে সাথী খাতুন ২০ ডিসেম্বর কালিহাতী থানায় একটি নিখোঁজ সংক্রান্ত সাধারণ ডায়েরি করেন। এ খবর শুনে তোতার স্বজনরা অনেক খোঁজাখুঁজি করে। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে জানতে পারেন রাত সাড়ে ৮টার দিকে পাথালিয়া বাজারে ঘোরাফেরা করে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন তোতা।
এদিকে আসামি জলিলের বাড়ির পাশে তোতার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি পাওয়া যায়। অপরদিকে ওইদিন দুপুরে ওই গ্রামের মোকছেদ আলী তার বাড়ির পূর্ব পাশে টয়লেটের সেপটিক ট্যাংকের মাটির পাট ভাঙা এবং স্লাব পরিবর্তন করার বিষয়টি স্থানীয় মেম্বারকে জানান এবং কে বা কারা ভেঙেছে বলাবলি করতে থাকেন। তোতার নিখোঁজের বিষয়ে খোঁজাখুঁজি করতে থাকাবস্থায় উল্লেখিত বিষয়টি এলাকার লোকজনের সন্দেহ হলে কালিহাতী থানার পুলিশকে খবর দেয়। পরে ২১ ডিসেম্বর শনিবার বিকেলে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সেপটিক ট্যাংক থেকে একটি লাশ উদ্ধার করে। লাশটি দেখে স্থানীয় লোকজন নিখোঁজ তোতার লাশ বলে শনাক্ত করেন।
এ ঘটনায় শনিবার দিবাগত রাতে উপজেলার পাথালিয়া এলাকা থেকে স্ত্রী সাথী খাতুন ও প্রেমিক উজ্জ্বলকে আটক করে কালিহাতী থানার পুলিশ।
কালিহাতী থানার ওসি হাসান আল মামুন বলেন, তোফাজ্জল হোসেন তোতা রাজমিস্ত্রির কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করত। গত বৃহস্পতিবার রাতে তিনি নিখোঁজ হন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে তার স্ত্রী থানায় এসে প্রথমে একটি ডায়েরি করেন। সেই ডায়েরির সূত্র ধরে তোতা মিয়াকে উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হয়। একপর্যায়ে জানতে পারি তার স্ত্রীসহ পরকীয়া প্রেমিক উজ্জ্বল দুজন মিলে তোতাকে হত্যা করে লাশ গুম করার জন্য পার্শ্ববর্তী এক পরিত্যক্ত বাড়ির সেপটিক ট্যাংকের ভেতরে ফেলে রাখে। সেই সূত্র ধরে সেখান থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহত তোফাজ্জল হোসেন তোতার ছোট ভাই তারা মিয়া বাদী হয়ে মামলা দায়ের করলে ঘটনার সাথে জড়িত তোতার স্ত্রীসহ পরকীয়ার প্রেমিক উজ্জ্বলকে গ্রেফতার করা হয়। আদালতে ১৬৪ ধারায় একজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন, অপরজনের জবানবন্দি চলছে।