চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার রায়ছটা গ্রামের বাসিন্দা মো. ইউনুস (২৭)। ২৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে তিনি এয়ার এরাবিয়ার একটি ফ্লাইটে সারজাহ হয়ে সৌদি আরবের জেদ্দা যাচ্ছিলেন।
বিমানবন্দরে প্রথম চেকিং পার হয়ে স্ক্যানিং মেশিনে ওই যাত্রীর ট্রলি ব্যাগে ইয়াবা ধরা পড়ে। পরে ব্যাগ থেকে ১০ হাজার ৮০০ ইয়াবা জব্দ করা হয়। তাকে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থানায় সোপর্দ করা হয়। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পতেঙ্গা থানার এসআই আনোয়ার হোসেন যুগান্তরকে জানান, ইয়াবাসহ গ্রেফতার বিদেশ যাত্রী ইউনুসকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রোববার আদালতে রিমান্ড আবেদন করা হবে। আদালত জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিলে এসব ইয়াবা তিনি কোথায় নিয়ে যাচ্ছিলেন। এরসঙ্গে আর কেউ জড়িত আছে কিনা, এসব বিষয় জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
বিমানবন্দর সূত্র জানিয়েছে, ৫টি মাদকের চালানে ২৪ হাজার ৮১০ পিস ইয়াবাসহ ৫ বিমানযাত্রীকে আটক করেছে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বিভাগ। ২৪ ডিসেম্বর ১০ হাজার ৮০০ পিস ইয়াবাসহ বাঁশখালীর বাসিন্দা ইউনুস ছাড়াও ইয়াবাসহ আটক হয়েছেন- ১৩ অক্টোবর ৩ হাজার ১১০ পিস ইয়াবাসহ আটক হয় মাস্কাটের ওমানগামী ফজল করিম (৩০)।
৬ জুলাই ৮৮০ পিস ইয়াবাসহ আহসানুল সগীর (২৮) নামে দুবাইগামী এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়। ২ জুন চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে টার্মিনালে প্রবেশের আগে সোহেল (৩০) নামে শারজাহগামী এক যাত্রীকে ৫ হাজার ১০ পিস ইয়াবাসহ আটক করে বিমানবন্দরে নিয়োজিত করেন আনসার সদস্যরা।
১ জুন চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৫ হাজার ১০ পিস ইয়াবাসহ ওবায়দুর রহমান (৩০) নামে এক যাত্রীকে আটক করে নিরাপত্তা বিভাগ।
জানা গেছে, বিমানবন্দর নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশিতে ৬ মাসে ৫টি ইয়াবার চালান আটক হলেও মাদকের অনেক চালানই নানা কৌশলে পৌঁছে গেছে গন্তব্যে। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে এসব ইয়াবা পাচার হচ্ছে।
বিশেষ করে সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কাতার, সৌদি আরবগামী প্রবাসীরা এসব ইয়াবা পাচার করছেন। কয়েকটি চালান চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে ওমান বিমানবন্দরে গিয়ে ধরা পড়েছে।
সম্প্রতি চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক উইং কমান্ডার এবিএম সারওয়ার-ই-জামানের সঙ্গে তার কার্যালয়ে বৈঠকে চট্টগ্রাম সমিতি ওমানের সভাপতি মোহাম্মদ ইয়াছিন চৌধুরী বলেন, মাদকদ্রব্যের চালান ধরা পড়ায় ওমান বিমানবন্দরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। খাবার, দাঁতের মাজন, পেস্টসহ নানা মাধ্যমে যাওয়া ইয়াবা-গাঁজার চালান আটক হয় ওমান বিমানবন্দরে। এরপর বাংলাদেশি যাত্রীদের কঠোর তল্লাশিতে পড়তে হচ্ছে। যা দেশের ইমেজই ক্ষুণ্ন করছে না, জনশক্তি বাজারের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কতিপয় ব্যক্তির অপকর্মে দুশ্চিন্তায় আছেন প্রায় ৮ লাখ ওমানপ্রবাসী। এজন্য চট্টগ্রাম ও ঢাকা বিমানবন্দরে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, বিমানবন্দরে তল্লাশি জোরদার করায় ইয়াবার এসব চালান আটক করা সম্ভব হয়েছে। আমরা মাদকসহ যে কোনো চোরাচালানের বিষয়ে জিরো টলারেন্সে আছি।