বৃহস্পতিবার জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে ‘ফ্লাশ অন রোহিঙ্গা জেনোসাইড’ শীর্ষক ৭ দিনব্যাপী আলোকচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবে একথা বার বার বললেও তারা নিচ্ছে না। এ ইস্যুতে দেশটির আন্তরিকতার অভাব রয়েছে। বাংলাদেশ ১ লাখ রোহিঙ্গার তালিকা পাঠিয়েছে, কিন্তু তারা শনাক্ত করেছে ৮ হাজার। দুইবার চেষ্টা করেও মিয়ানমারের অসহযোগিতায় প্রত্যাবাসন ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় না দিতেন তাহলে বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় গণহত্যা হতো। তারপরও ২০ হাজার রোহিঙ্গা মারা গেছেন। কিছু দেশ ছাড়া অনেক বন্ধু দেশ এ ইস্যুতে আমাদের সহযোগিতা করছে। ১৩৪টি দেশ জাতিসংঘে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। ৯টি দেশের মধ্যে ৪টি বলেছে প্রতিবেশী শক্তিশালী বলে তারা বিপক্ষে রায় দিয়েছে। অং সান সু চি নিজেও স্বীকার করেছেন মিয়ানমারে হত্যাকাণ্ড হয়েছে।
ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশের ফরেন পলেসি হচ্ছে সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো জন্য শত্রুতা নয়। ভারত, নেপাল, ভুটান এমনকি মিয়ানমারের সঙ্গেও বাংলাদেশের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। তিনি বলেন, আমরা মিয়ানমারকে বলেছি, রোহিঙ্গারা তোমাদের লোক, অথচ তারা তোমাদের বিশ্বাস করে না। রোহিঙ্গা নেতাদের নিয়ে যাও রাখাইনে। তাদের জন্য কী আয়োজন করেছ দেখাও, প্রমাণ দেখাও, কিন্তু তারা কোনো কিছুর উত্তর দেয় না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ সমস্যা মিয়ানমার সৃষ্টি করেছে, সমাধানও সেখানে। দ্বিপক্ষীয় ছাড়াও এ ইস্যুতে চীন যুক্ত হয়েছে। ভয় হচ্ছে এত মানুষ দীর্ঘ সময় এখানে থাকলে সন্ত্রাসের জন্ম হবে, যা গোটা বিশ্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।
ড. মোমেন বলেন, চীন জাপান মিয়ানমারে ব্যবসা করতে চায়। কিন্তু এ সংকট জিইয়ে রেখে তারা লাভবান হতে পারবে না। চীন রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে বলে কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। এ বিষয়ে সকল দেশ এক বাক্যে বলেছে, রোহিঙ্গাদের ফেরত যাওয়া উচিৎ কিন্তু মিয়ানমার মানছে না।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকি বলেন, মিয়ানমারে যে নৃশংস ঘটনা ঘটেছে তা স্বরণকালে ঘটেনি। মিয়ানমারের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক থাকবে কিন্তু মানবিক সম্পর্ককে ছাপিয়ে নয়।