রাজধানীর কুর্মিটোলা এলাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রীর ধর্ষণকারী মজনুর সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা। ঢাবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এবার নিজের প্রতিবন্ধী কন্যার ধর্ষণের বিচার চেয়ে কাঁদলেন ঢাবি ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) পরিচিত মুখ চা বিক্রেতা ‘স্বপন মামা’। টিএসসিতে সবাই তাকে স্বপন মামা বলে ডাকে। কিন্তু তার নাম আব্দুল জলিল।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ধর্ষণের প্রতিবাদে মানববন্ধন করে শিক্ষার্থীরা। এ সময় ঢাবি ছাত্রী ধর্ষণের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করেন তিনি। সংহতি প্রকাশের সময় নিজের বক্তব্যে মেয়ের ধর্ষণের কথা উল্লেখ কেঁদে ফেলেন স্বপন মামা।
আব্দুল জলিল বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ধর্ষণের প্রতিবাদে আমি একাত্মতা ঘোষণা করলাম। আমারও এক মেয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে। আমি তার বিচার পাইনি। এ সময় অঝোরে তার চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়তে দেখা যায়।
উপস্থিত সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীদের তিনি বলেন, আমি যেন আমার মেয়ের ধর্ষণের বিচার পাই, এটার ব্যবস্থা আপনারা সবাই করবেন। আর যেন কোনো মেয়ে ধর্ষণের শিকার না হয়, আপনারা সেই ব্যবস্থা করবেন।
আব্দুল জলিল বলেন, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক দিন ধরে আছি। এই ক্যাম্পাসের সঙ্গে আমি জড়িত। আর যেন কোনোদিন এই রকম ধর্ষণ না হয়। এভাবে কারও চোখের পানি যেন আর না ঝরে। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবেদন করছি, আমি যেন মেয়ে ধর্ষণের সঠিক বিচার পাই।
উল্লেখ্য, আব্দুল জলিলের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের বাসুদেব গ্রামে। ২০ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী মেয়েসহ তার পরিবার গ্রামেই থাকেন। গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর তার মেয়েকে একই গ্রামের প্রায় ৭০ বছর বয়সী বাচ্চু মিয়া ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। ওইদিনই অভিযুক্তসহ তিন জনকে আসামি করে মামলা করার পর বাচ্চু মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ঘটনার ৬ মাস পর অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আসামিকে গত ২৭ নভেম্বর জামিন দেন।
জামিনে মুক্ত হয়ে আসামিপক্ষ স্বপন মামা, তার ছেলে রনি ও তার চাচাতো ভাইকে আসামি করে প্রথমে মাদক এবং পরে ডাকাতির মামলা করেন। এরপর থেকে নিজের মেয়ের ধর্ষণের বিচার ও তার বিরুদ্ধে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন আব্দুল জলিল।