অপরাধ না করেও পুলিশ ও আইনজীবীর ভুলে আসামি হয়ে দুই মাস কারাভো করেন নাটোর সিংড়া উপজেলার আঁচলকোট গ্রামের হতদরিদ্র বাবলু শেখ। কারাগার থেকে মুক্তি মিললেও অব্যাহতি পাননি মামলা থেকে। নিজের আসল পরিচয় জানাতে ১৮ বছর ধরে আদালতের বারান্দায় ঘুরতে হয়েছে তাকে। অবশেষে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতির আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) নাটোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সাইফুর রহমান সিদ্দিকীর আদালত এ রায় দেন। একই সঙ্গে এ ঘটনায় দায়ী তদন্তকারী দুই পুলিশ ও তৎকালীন ওসির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আইজিপিকে নির্দেশও দেয়া হয়েছে। বাবলু শেখকে ক্ষতিপূরণও দিতে বলা হয়েছে।
দায়ী আইনজীবীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আইনজীবী সমিতিকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বাবলু শেখের বর্তমান আইনজীবী অ্যাডভোকেট শামীম উদ্দীন জানান, গত ২২ সেপ্টেম্বর বাবলু শেখের আপিল শুনানির রায়ের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু সেদিন দুপুরে নাটোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সাইফুর রহমান সিদ্দিকী মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করে জানান, বাবলু শেখের বিষয়টি আলোচিত ঘটনা হওয়ায় তা অধিক পর্যালোচনা করা হবে।
তাই ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যবেক্ষণসহ রায়ের দিন ধার্য করেন তিনি। কিন্তু ওই তারিখে নাটোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য মোজাম্মেল হকের মৃত্যুর কারণে ফুল কোর্ট রেফারেন্স ঘোষণা হওয়ায় আদালতের সব কার্যক্রম স্থগিত হয়।
ফলে বাবলু শেখের মামলার রায়ের দিনক্ষণ পিছিয়ে যায়। পরে মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করে আদালত ১৭ অক্টোবর আপিল শুনানির রায়ের দিন ধার্য করেন।
জানা গেছে, ২০০১ সালের ১৫ এপ্রিল নাটোর সদর উপজেলার গাঙ্গইল গ্রামে একটি মারামারির মামলার আসামি শ্রী বাবুর পরিবর্তে বাবলু শেখকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। পরে তৎকালীন আইনজীবী লুৎফর রহমান শ্রী বাবু নামেই বাবলু শেখের জামিন করান। সেই থেকে বাবুল শেখ হয়ে যান শ্রী বাবু।
দুই দফায় দুইমাস কারাভোগের পর ১৮ বছর ধরে হতদরিদ্র বাবলু শেখ নিজের সঠিক পরিচয় জানাতে ঘুরে বেড়ান আদালতের বারান্দায়।