ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে ভোট পর্যবেক্ষণে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অনুমতি পেয়েছে বিভিন্ন দূতাবাসে কর্মরত ২৮ জন বাংলাদেশি। এসব বাংলাদেশি নাগরিকদের নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলে না রাখার আহ্বান জানিয়ে বিদেশি দূতাবাসগুলোতে চিঠি দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বিদেশি মিশনগুলোতে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের বিদেশিদের জন্য নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা অনুযায়ী, মিশনের কোনো বাংলাদেশি কর্মী আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক হিসেবে ভোট পর্যবেক্ষণ করতে পারবে না।
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি ও ডিএনসিসি) নির্বাচনে বিদেশি কূটনৈতিক পর্যবেক্ষক দলে বাংলাদেশি নাগরিকদের অন্তর্ভুক্ত না করার বিষয়টি প্রশংসনীয় হবে।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে ভোট পর্যবেক্ষণে ১০টি বিদেশি দূতাবাস থেকে ৭৪ জনকে অনুমতি দিয়েছে ইসি। যাদের মধ্যে ২৮ জন বাংলাদেশি নাগরিক আছেন, তারা বিভিন্ন বিদেশি মিশনে চাকরি করেন।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, দুই সিটিতে বিদেশি পর্যবেক্ষকসহ ১ হাজার ৮৭ জন ভোট পর্যবেক্ষণ করবেন। এদের মধ্যে ২২টি দেশি সংস্থার মাধ্যমে ১ হাজার ১৩ জন স্থানীয় পর্যবেক্ষক রয়েছেন।
অন্যদিকে, পশ্চিমা দেশের ১০টি দূতাবাসের মাধ্যমে ৭৪ জন বিদেশি পর্যবেক্ষক সিটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন। এদের মধ্যে ৪৬ জন সরাসরি বিদেশি নাগরিক এবং ২৮ জন বাংলাদেশি নাগরিক। এই ২৮ জন বাংলাদেশি ১০টি বিদেশি দূতাবাসের বিভিন্ন পদে চাকরি করেন।
জানা যায়, ১০টি দূতাবাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের মাধ্যমে ২৭ জন পর্যবেক্ষক ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন পরিদর্শন করবেন। এই ২৭ জনের মধ্যে ১৮ জন বিদেশি, ৯ জন বাংলাদেশি নাগরিক রয়েছেন। ব্রিটিশ দূতাবাসের মাধ্যমে ১২ জন পর্যবেক্ষক নির্বাচন পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। এর মধ্যে ৫ জন বিদেশি নাগরিক এবং ৭ জন বাংলাদেশি নাগরিক। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ৫ জন পর্যবেক্ষকের সবাই ইউরোপের নাগরিক। নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের রয়েছেন ৬ জন, এদের মধ্যে ৫ জন বিদেশি। সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের ৬ জন পর্যবেক্ষক রয়েছেন। এদের মধ্যে ২ জন বিদেশি নাগরিক। জাপান দূতাবাসের মাধ্যমে ৫ জন, এর মধ্যে ৩ জন বিদেশি নাগরিক। ডেনমার্ক দূতাবাসের মাধ্যমে ৩ জন, এর মধ্যে ২ জন বিদেশি নাগরিক, নরওয়ে দূতাবাসের ৪ জন, এদের মধ্যে ২ জন বিদেশি, অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশন থেকে ২ জন বিদেশি নাগরিক। কানাডা হাইকমিশন থেকে ৪ জন, এর মধ্যে ২ জন কানাডিয়ান নাগরিক দুই সিটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন।
নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা অনুযায়ী, দেশি ও বিদেশিদের আলাদাভাবে আবেদন করতে হবে। কিন্তু ঢাকা সিটি নির্বাচনে ভোটের ক্ষেত্রে দেশি কর্মীদের বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে আবেদন করেছে বিদেশি মিশনগুলো। ইসি সেভাবেই তাদের জন্য পরিচয়পত্র ইস্যু করেছে। দূতাবাসগুলোর এটা করা ঠিক হয়নি বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, এ ঘটনাটি সুস্পষ্ট আইনের লঙ্ঘন। বিদেশি হিসেবে বাংলাদেশের নাগরিক ভোট পর্যবেক্ষণে কোনোভাবেই কেন্দ্রে প্রবেশে অনুমতি পেতে পারে না। এই ভুলের দায়ভার দূতাবাসগুলোর নেওয়া উচিত বলে করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।