বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায় চিকিৎসার নামের কালাম মৃধা (৪২) নামের এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে ও ১০১ বার পানিতে চুবিয়ে হত্যার ঘটনায় ভণ্ড ফকিরসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৮।
আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বরিশাল নগরীর রূপাতলী বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন, বাকেরগঞ্জের আউলিয়াপুর গ্রামের বাসিন্দা ভণ্ড ফকির মো. রিয়াজ উদ্দিন ফকির (৪৮), তার স্ত্রী তাসলিমা আক্তার লাকি (৪২) ও ছেলে মো. তৌহিদুর রহমান (১৮)।
মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে নগরীর রূপাতলীস্থ র্যাব-৮ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের উপ-অধিনায়ক মেজর খান সজিবুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
খান সজিবুল ইসলাম জানান, পিটিয়ে ও চুবিয়ে হত্যা করা কালাম মৃধা পটুয়াখালী সদর উপজেলার খলিশাখালী গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন, যার ফলে গত শুক্রবার সকালে বাকেরগঞ্জে রিয়াজ ফকিরের বাড়িতে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় তাকে।
এ সময় রিয়াজ ফকির ও তার চাচাতো ভাই অসীম ফকিরসহ চার থেকে পাঁচজন মিলে সকালে এবং বিকেলে কালাম মৃধাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে তাদের বাড়ি সংলগ্ন পুকুরে ১০১ বার চুবান। এতে কালাম মৃধা অসুস্থ হলে তাকে মাজার সংলগ্ন একটি কক্ষে নিয়ে রাখেন তারা। সেখানেই সন্ধ্যার দিকে মারা যান কালাম মৃধা। পরে তার লাশ বাড়ির পাশের একটি বাগানে ফেলে রাখেন তারা। সেই সঙ্গে ওই ঘটনার পর থেকেই আত্মগোপনে চলে যান হত্যাকারীরা।
আসামিদের দেওয়া স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে র্যাব আরও জানায়, অভিযুক্তদের দাদা মৃত ফকির আ. রহমান মুন্সী (কালুসা দেওয়ান) প্রথম জীবনে মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন এবং মুন্সী পদবী গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে তিনি ফরিদপুরের দত্তপাড়ায় মোহনসা দেওয়ানের মুরিদ হয়ে এলাকায় এসে দরগাহ/খানকাহ খোলেন। তার মৃত্যুর পরে আসামির চাচা সাম দেওয়ান পীরদানী চালিয়ে যান।
সাম দেওয়ান মারা যাওয়ার পর তার ছেলে খোকন দেওয়ান পীরদানী চালু রাখেন। খোকন দেওয়ান মারা যাওয়ার পর চার থেকে পাঁচ বছর ধরে বাকেরগঞ্জের আউলিয়াপুরে পীরদানী ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন রিয়াজ উদ্দিন মৃধা। চিকিৎসার নামে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা, গরু, ছাগল, মুরগি, চাল-ডাল, সবজি ইত্যাদি গ্রহণ করতেন তিনি।
সর্বশেষ চিকিৎসার নামে মৃধাকে পিটিয়ে এবং চুবিয়ে হত্যা করেন কালাম। এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় কালাম মৃধাসহ বেশ কয়েকজনকে আসামি করা হয়। পরে ওই মামলার প্রধান আসামি কালামসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৮। তাদের বাকেরগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।